১৪ দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা অসম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, "যে কোনো অভ্যুত্থানের পর এমন ঘোষণাপত্র স্বাভাবিক। সরকার চেয়েছে তাদের মাধ্যমে এটি দেওয়া হোক। সকলের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ছাত্ররাও চাইছে সবার ঐকমত্য। ১৪ দিনের মধ্যে অসম্ভব নয়।"
তিনি আরও জানান, সংস্কারের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। "বিএনপি বলেছে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে এবং তারা লিখিত মতও দিয়েছে। তবে সংস্কারের ব্যাপকতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কেউ বলছে মৌলিক সংস্কার আগে করা হোক, কেউ বলছে নির্বাচন আগে হোক, কিন্তু সরকারের কাছে সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ," বলেন রিজওয়ানা।
গত ২৯ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এর পরের দিন, গত সোমবার, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সরকারই জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে।
এই বক্তব্যের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' প্রকাশের কর্মসূচি স্থগিত করে এবং তার পরিবর্তে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ঘোষণাপত্র দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এদিকে, নতুন বছরে সরকারের সামনে তিনটি প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে রিজওয়ানা বলেন, “নতুন বছরে সরকারের সামনে তিনটি লক্ষ্য রয়েছে—জুলাই–আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক মতৈক্য গড়ে তোলা এবং প্রস্তাবিত সংস্কার নিশ্চিত করা, রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন করা। এছাড়া সাধারণ কর্মকাণ্ড, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখাও সরকারের লক্ষ্য।”
বৈঠকের পর তিনি সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে একটি ভিডিও দেখার কথা জানান। তিনি বলেন, “আজকের কেবিনেট বৈঠকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন কীভাবে আগুন লাগে।” তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত করতে সংগৃহীত আলামত বিদেশে পাঠানো হয়েছে এবং তদন্তের প্রতিবেদন সরকার সন্তুষ্টির সঙ্গে গ্রহণ করেছে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, “সরকারের অবস্থান হচ্ছে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তার বিচার করা। কোনো দল নির্বাচন করবে, না করবে—তা নির্বাচন কমিশন বলতে পারে। সরকার আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত তো নেয়নি।”